ভ্যাটিকান সিটি

ভ্যাটিকান সিটি পৃথিবীর অন্যতম রহস্যময়ী দেশ, ইটালির ভিতরে অবস্তিত পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র। যার আয়তন মাত্র .৪৪ বর্গ কিলোমিটার অথবা ১১০ একর। এর পুরো সীমান্ত জুড়ে থাকা ইটালির সাথে সীমান্ত দীর্ঘ ৩.২ কিলোমিটার। ভ্যাটিকান সিটির আনুমানিক জনসংখ্যা ১০০০ এর মতো। ভ্যাটিকান রাষ্ট্রটি ইটালির রাজধানী রোম শহরের তিবের নদীর পশ্চিমে অবস্থিত, যেটি মধ্যযুগ ও রেনেসাঁর সময় নির্মিত প্রাচীরের দ্বারা রোম শহর থেকে পৃথক করা হয়েছে। পৃথিবীর এই ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটি স্বাধীন হলেও জাতিসংঘের সদস্য নয়। ইটালির সঙ্গে ভ্যাটিকানের পোপের দ্বন্দের কারণে দেশটির আয়তন কমে যায়। ১৯২৯ সালে ইটালির রাষ্ট্রনায়ক মুসিলিনির উদ্যেগে লাতেরান চুক্তির অধীনে পোপের সাথে ইটালির দ্বন্দের নিস্পত্তি হয়।

দেশটির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে, যাদের নাম “পটেনশিয়াল সুইস গার্ড”, যার সদস্য সংখা মাত্র ১৩৫ জন। সুইস আর্মিদের বয়স ১৯ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ বছর, এবং তাদের বিবাহ নিষিদ্ধ থাকে। জন্মসূত্রে এখানকার নাগরিক হওয়া যায় না, নাগরিকত্ব পেতে হলে এখানকার লোকদের সাথে কাজে যুক্ত থাকতে হয় এবং পোপের অনুমতি পেতে হয়। এখানে খ্রিষ্টান ধর্মের রোমান ক্যাথলিক শাখার প্রধান ধর্মগুরু পোপের বসবাস। তিনি ভ্যাটিকান সিটির সাংবিধানিক রাষ্ট্রপ্রধান এবং একি সাথে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। এখানকার দাপ্তরিক ভাষা লাতিন এবং ইতালিয়। তবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ইটালিয়ান ভাষা। ভ্যাটিকান সিটির সাংবিধান, ডাকব্যবস্থা, সীলমোহর, পতাকা সহ সকল রাষ্ট্রীয় পতীক বিদ্ধমান। পোপের ছবি খোঁদাই করা ইউরো মূদ্রা গ্রহণ করেছে দেশটি, এই মূদ্রা ইটালিতেও চলে। পৃথিবীর মাত্র দুটি দেশে বিবাহ বিচ্ছেদের অনুমতি নেই, একটি পিলিপাইন এবং অন্যটি এই ভ্যাটিকান সিটি। ভ্যাটিকান সিটির আয়ের প্রধান উৎস পর্যটন শিল্প। প্রতি বছর মধ্যযুগে নির্মিত উদ্যান, বাহারী দালান ও চত্বর দেখতে ভিড় করে প্রায় অর্ধ কোটি পর্যটক। এই ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটিকে ১৯৮৪ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ঘোষণা করে।