ভারতের জন্য শুরু থেকেই চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি খ্যাপাটে বিশ্ব নেতা হিসেবে পরিচিত। শপথ অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আমন্ত্রণ জানানোর পাশাপাশি ট্রাম্প তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। যদিও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা চান না, তবু বৈরিতাও বাড়াতে চান না—এমন ইঙ্গিতই মিলেছে টিকটকের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তে।
ট্রাম্পের এই চীনপ্রীতি ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ। কারণ, চীনের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনা এবং সেনা মহড়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এর মধ্যে ট্রাম্প তার শপথ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানাননি, এমনকি ফোনেও যোগাযোগ করেননি। ভারতের জন্য কোনো আশ্বাসও এখনো শোনা যায়নি তার প্রশাসন থেকে।
এর মধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসন থেকে এসেছে আরেকটি দুঃসংবাদ। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে তার প্রশাসন। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয় অভিবাসীকে ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের দেশে ফেরানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার ভারতীয় বিনা অনুমতিতে বসবাস করছেন। এদের যদি দেশে ফেরত পাঠানো হয়, তবে ভারতের অর্থনীতি বড় ধাক্কা খাবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রেরিত ডলারের প্রবাহ কমে গেলে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে পড়তে পারে। ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের খবর প্রকাশের পর থেকেই ভারতীয় রুপির মান দ্রুত কমছে, এবং বিদেশি বিনিয়োগে ধস নেমেছে।
এ পরিস্থিতিতে মোদি সরকার দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। প্রথম ধাপে চিহ্নিত ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় সম্মতি জানিয়েছে দিল্লি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বড় ধরনের ধাক্কা এড়াতে মোদি সরকার এখন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করার চেষ্টা করছে। কারণ, ট্রাম্প অসন্তুষ্ট হলে ভারতকে আরও নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হতে পারে।
এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামী মাসে ওয়াশিংটনে মোদি-ট্রাম্প দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজনের চেষ্টা চলছে। বৈঠকে চীনের প্রভাব মোকাবিলা, বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার এবং দক্ষ ভারতীয় কর্মীদের ভিসার সহজলভ্যতার বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।