বেইজিং, ৮ মার্চ: ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপের মধ্যে মতপার্থক্য সৃষ্টি হওয়ায় চীন কৌশলগতভাবে এই পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের অবস্থানের ফলে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে ঐক্য দুর্বল হচ্ছে, আর এই বিভক্তির মধ্য দিয়ে চীন তার কূটনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে চাইছে।
ট্রাম্পের ইউক্রেন নীতিতে পরিবর্তন
ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য ইউরোপকে বেশি ভূমিকা রাখতে বলছেন এবং ন্যাটোর ওপর মার্কিন নির্ভরশীলতা কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। ফলে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি সহায়তা কমিয়ে দেয়, তবে ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কী হবে।
চীনের কৌশলগত স্বার্থ
চীন দীর্ঘদিন ধরেই ইউক্রেন সংকটে নিরপেক্ষ অবস্থান দেখালেও পর্দার আড়ালে রাশিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল। পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হলে এটি রাশিয়ার পক্ষে যাবে এবং চীন তার প্রধান মিত্র রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে পারবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হলে চীন অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে লাভবান হবে। কারণ ইউরোপ যদি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর কম নির্ভরশীল হয়, তবে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী হতে পারে।
বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব
বিশ্বরাজনীতিতে চীনের অবস্থান আরও সুসংহত করার এটাই সুবর্ণ সুযোগ। ট্রাম্প যদি ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক দুর্বল করে দেন, তবে চীন সহজেই ইউক্রেন ইস্যুতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
এদিকে, ইউরোপীয় নেতারা চীনের এই কৌশল সম্পর্কে অবগত এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঐক্য ধরে রাখার চেষ্টা করছে। তবে ট্রাম্পের অবস্থান যদি পরিবর্তন না হয়, তাহলে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে দীর্ঘমেয়াদী বিভক্তি দেখা দিতে পারে, যা চীনের জন্য কৌশলগতভাবে লাভজনক হতে পারে।