পিয়ংইয়ং, ৮ মার্চ: উত্তর কোরিয়া তাদের প্রথম পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন নির্মাণের চিত্র প্রকাশ করেছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার ভারসাম্য বিপর্যস্ত করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সরকারি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ‘স্ট্র্যাটেজিক গাইডেড মিসাইল’ (কৌশলগত নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র) বহনকারী একটি সাবমেরিনের আংশিক দৃশ্য দেখা গেছে।
বড় সামরিক অগ্রগতি
উত্তর কোরিয়ার সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর এ উদ্যোগকে ‘গুরুতর হুমকি’ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। দক্ষিণ কোরিয়ার সাবমেরিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “এই ধরণের সাবমেরিন পারমাণবিক হামলার ক্ষমতা রাখলে এটি নিঃসন্দেহে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে।”
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-উন সামরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য দীর্ঘদিন ধরেই পরমাণু সাবমেরিনের পরিকল্পনা করে আসছিলেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উত্তর কোরিয়ার নৌবাহিনী আরও কৌশলগত সুবিধা পাবে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরক্ষা কৌশলে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধি
বিশ্লেষকরা বলছেন, পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন নির্মাণের ফলে উত্তর কোরিয়ার সামরিক কার্যক্রম আরও জটিল হবে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। কারণ, এই ধরনের সাবমেরিন দীর্ঘ সময় পানির নিচে থাকতে পারে এবং সহজে শনাক্ত করা যায় না।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা উত্তর কোরিয়ার এ সামরিক উন্নয়ন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রয়েছে।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া
উত্তর কোরিয়ার এ সামরিক উন্নয়ন নিয়ে ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো। তারা মনে করছে, পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন নির্মাণের মাধ্যমে পিয়ংইয়ং তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির আরও বিস্তার ঘটাতে পারে, যা বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
বিশ্ব রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার এ সামরিক পদক্ষেপ আসন্ন সময়ে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং সম্ভাব্য কূটনৈতিক আলোচনার পথ কঠিন করে তুলতে পারে। এখন দেখার বিষয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই নতুন পরিস্থিতির মোকাবিলা কীভাবে করে।