বিশ্বজুড়ে মার্কিন ডলারের আধিপত্য: কীভাবে তৈরি হলো এই অর্থনৈতিক প্রভাব?
বিশ্ব অর্থনীতিতে মার্কিন ডলারের আধিপত্য নতুন কিছু নয়। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও আর্থিক লেনদেনের প্রধান মুদ্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কলম্বিয়া থেকে ভিয়েতনাম পর্যন্ত, বিশ্বের বহু দেশ ডলারকে নিরাপদ বিনিময় মাধ্যম ও মূল্য সংরক্ষণের উপায় হিসেবে গ্রহণ করেছে। কিন্তু মাত্র ৪ শতাংশ জনসংখ্যার একটি দেশ কীভাবে বৈশ্বিক ব্যাংকিং ও বাণিজ্যে এত শক্তিশালী ভূমিকা অর্জন করল?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ডলারের উত্থান
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব অর্থনীতিতে ডলারের অবস্থান সুসংহত হয়। ব্রেটন উডস চুক্তির মাধ্যমে এটি বৈশ্বিক মূল মুদ্রা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, যার ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বেশিরভাগ লেনদেন ডলারে হতে থাকে। তবে এই একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। বিশেষ করে ফ্রান্স এই অবস্থানকে “অত্যাধিক সুবিধা” বা “exorbitant privilege” বলে আখ্যা দেয়, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক নীতিগুলো বিশ্ব অর্থনীতিকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে।
বিকল্প মুদ্রার উত্থান ও চ্যালেঞ্জ
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মার্কিন ডলারের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য মুদ্রাকে ব্যবহারের বিভিন্ন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। চীন তার ইউয়ানকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে জনপ্রিয় করতে চাইছে, রাশিয়া ও কিছু অন্যান্য দেশও ডলারের উপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে। তবে এসব প্রচেষ্টা কতটা সফল হচ্ছে? ডলারের আধিপত্য কি চ্যালেঞ্জের মুখে?
বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিকোণ
ইজি লরেন্স এই ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করেছেন বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ ও ইতিহাসবিদদের সঙ্গে। তাদের মধ্যে রয়েছেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এইচ ডব্লিউ ব্র্যান্ডস জুনিয়র, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যারি আইচেনগ্রিন, নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেলগ স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের ক্যারোলা ফ্রাইডম্যান এবং বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের পারডি স্কুল অব গ্লোবাল স্টাডিজের পেরি মেহরলিং।
বিশ্ব অর্থনীতিতে মার্কিন ডলারের প্রভাব, এর ভবিষ্যৎ এবং বিকল্প মুদ্রার সম্ভাবনা নিয়ে এই আলোচনায় উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন আসছে, তবে ডলারের আধিপত্য এখনও বহাল রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এই চিত্র বদলাতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।