প্রতারণামূলক অর্থপ্রদান রোধে নতুন আইন, HMRC পাবে আরও ক্ষমতা
সরকার নতুন আইন প্রণয়ন করেছে, যার মাধ্যমে প্রতারণামূলক সুবিধা দাবি ও ভুল অর্থপ্রদানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই আইনের অধীনে, কর্মকর্তারা এখন ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি অর্থ তুলে নেওয়ার ক্ষমতা পাবেন, যদি কেউ ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হন।
HMRC-এর জ্যেষ্ঠ প্রতারণা তদন্ত কর্মকর্তা রিচার্ড লাস সম্প্রতি পার্লামেন্টে ব্যাখ্যা করেছেন, কেন সংস্থাটি নিয়মিতভাবে যুক্তরাজ্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত বিপুল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করে। আলোচনার সময় উঠে আসে যে তদন্তকারীরা ভবিষ্যতে DWP (ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস) সুবিধার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা পেতে পারেন, যাতে প্রতারণামূলক দাবির সন্ধান করা যায়।
HMRC ইতোমধ্যে Finance Act 2011-এর আওতায় ব্যাংক তথ্য চাওয়ার ক্ষমতা রাখে, যাতে সঠিকভাবে কর পরিশোধ নিশ্চিত করা যায়। এমপিদের সঙ্গে আলোচনায় রিচার্ড লাস বলেন, HMRC “বাল্ক ডাটা গ্যাদারিং” বা গণতথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম বছরে একবার পরিচালনা করে, যা রিয়েল-টাইম পর্যবেক্ষণ নয়। তিনি ব্যাখ্যা করেন, এই বিশাল তথ্য সংগ্রহ মূলত নিশ্চিত করতে সাহায্য করে যে, সঞ্চিত সুদের ওপর যথাযথ কর পরিশোধ করা হয়েছে কি না। যদিও বেশিরভাগ মানুষের সুদের পরিমাণ কম, তবে কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে এটি অনেক বেশি হতে পারে, যা বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
রিচার্ড লাস আরও জানান, HMRC শুধু ব্যাংক নয়, অন্যান্য উৎস থেকেও আর্থিক লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করে, যেমন ব্যবসায়িক লেনদেন পর্যবেক্ষণের জন্য merchant acquirers ও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে তথ্য নেওয়া হয়। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, এসব তথ্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয় এবং গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। তবে, এই ক্ষমতার ওপর কোনো স্বাধীন তদারকি রয়েছে কি না, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন এবং এটি যাচাই করতে হবে বলে জানান।
নতুন আইনে কী থাকছে?
আসন্ন আইন অনুসারে, ঋণ আদায়ের জন্য কর্মকর্তারা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ তুলে নিতে পারবেন, তবে তার আগে কমপক্ষে তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করা হবে, যাতে দেখা যায় ব্যক্তির কাছে পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে কি না। যদি কোনো ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন, তবে আদালতের অনুমতি নিয়ে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতাও কর্মকর্তাদের দেওয়া হবে।
ক্যাবিনেট আন্ডার-সেক্রেটারি জর্জিনা গোল্ড ব্যাখ্যা করেছেন, এই বিলের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও PAYE আয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হলেও, কিছু ক্ষেত্রে বিকল্প উপায়ে ঋণ পুনরুদ্ধার করা হতে পারে। কিছু ব্যক্তির ব্যাংকে তেমন অর্থ না থাকলেও তারা বড় অংকের সম্পত্তির মালিক হতে পারেন বা বিদেশে সম্পদ রাখতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে সরকার আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যথাযথ ও কার্যকর উপায়ে ঋণ আদায়ের উদ্যোগ নেবে, যার মধ্যে liability orders-এর মতো পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এই নতুন আইন কার্যকর হলে, HMRC আরও শক্তিশালী ক্ষমতা পাবে, যা যুক্তরাজ্যের আর্থিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও কঠোর করবে বলে মনে করা হচ্ছে।