বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে এবং ‘সাম্য, ন্যায্যতা, প্রগতি’ স্লোগানকে সামনে রেখে রাজধানীর খামারবাড়িতে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতার দল’-এর আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে গঠিত এই দলে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যুক্ত থাকবেন বলে দলটির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন।
দলের আহ্বায়ক হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম কামাল দায়িত্ব পালন করবেন, আর প্রধান সমন্বয়ক ও মুখপাত্র করা হয়েছে মেজর (অব.) ডেল এইচ খানকে। তবে এখনো দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি, যা ঈদের পর প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
দলটির নেতৃত্বে সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের প্রাধান্য থাকলেও সরকারি কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক ব্যবস্থাপক, ব্যবসায়ী ও গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও অংশগ্রহণ থাকবে। দলটি দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে বিতর্কহীন প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন, যাদের মধ্যে ছিলেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, সাবেক মন্ত্রী নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, রাজনীতিবিদ আজম খানসহ বেশ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা।
দলের আহ্বায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামীম কামাল বলেন, “আমাদের রাজনীতি হবে নীতি ও মূল্যবোধভিত্তিক। আমরা কেবল সৎ, সাহসী, শিক্ষিত ও দেশপ্রেমিক মানুষদের নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।”
নতুন দল গঠনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দলটির নেতারা বৈঠক করেছেন। দল গঠনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ৭ মার্চ ঢাকায় একটি ইফতার অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়িক অঙ্গনের ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, দলটিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি বড় অংশ যুক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকে মনে করছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা অবহেলিত হয়েছে এবং নতুন এই দলকে তারা একটি বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখছেন।
দল গঠনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শামীম কামাল। তিনি প্রয়াত সংসদ সদস্য মুজিবর রহমানের সন্তান। মুজিবর রহমান বিএনপির মনোনয়নে ১৯৭৯ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং পরে লালমনিরহাট-২ আসন থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০১৬ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।