রাশিয়ার ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’ হুমকি: কোন দেশ সবচেয়ে নিরাপদ?
রাশিয়া আবারও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি দিয়েছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রধান মিত্র—ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের নেতাদের ‘অবিবেচক’ বলে আক্রমণ করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব যেন একের পর এক পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কার মুখোমুখি হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনা কমার বদলে আরও বাড়ছে, আর বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি চুক্তি করানোর চেষ্টা করছেন। এর মধ্যেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার ইউক্রেনে ন্যাটোর ১০,০০০ সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। এই পরিকল্পনাকে কঠোর ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছেন মেদভেদেভ।
তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “ম্যাক্রোঁ ও স্টারমার নির্বোধের মতো আচরণ করছেন। বহুবার বলা হয়েছে, শান্তিরক্ষীরা ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর হওয়া উচিত নয়। কিন্তু তারা বলছে, ‘আমরা হাজার হাজার সেনা পাঠাব।’ এর মানে হলো তারা কিয়েভের নাৎসি সরকারকে সাহায্য করতে চায়, যা ন্যাটোর সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধের সমান। ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করুন, বোকারা!”
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন যে, যদি ন্যাটো ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করে, তাহলে রাশিয়া তার বিশাল পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার ব্যবহার করতে পিছপা হবে না। এই পরিস্থিতি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কাকে আরও ঘনীভূত করছে।
এই হুমকির পর অনেকেই ভাবছেন, যদি পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে কোথায় নিরাপদ আশ্রয় নেওয়া যাবে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধ থেকে বাঁচার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থানগুলোর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে অ্যান্টার্কটিকা। এর চরম দূরবর্তী অবস্থান একে পারমাণবিক হামলার ঝুঁকি থেকে দূরে রাখবে, যদিও সেখানে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো একেবারেই সীমিত।
এরপরই তালিকায় রয়েছে নিউজিল্যান্ড। দেশটি জনবসতিহীন বিস্তীর্ণ এলাকা ও ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন অবস্থানের কারণে যুদ্ধে সরাসরি জড়ানোর সম্ভাবনা কম। জানা গেছে, ওপেনএআই-এর প্রধান স্যাম অল্টম্যান ও পেপ্যালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা পিটার থিয়েল সংকট দেখা দিলে নিউজিল্যান্ডে আশ্রয় নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
একটি অপ্রত্যাশিত কিন্তু সম্ভাবনাময় বিকল্প হতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির উর্বর জমি, খাদ্য উৎপাদনের সক্ষমতা, বিশুদ্ধ পানির প্রাচুর্য এবং আধুনিক অবকাঠামো এটিকে একটি আদর্শ নিরাপদ আশ্রয়স্থল করে তুলতে পারে।
এছাড়াও আইসল্যান্ডের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, চিলির দীর্ঘতম উপকূলরেখা এবং ফিজির বিচ্ছিন্ন দ্বীপসমূহ এটিকে সম্ভাব্য নিরাপদ স্থান হিসেবে বিবেচিত করছে বিশেষজ্ঞরা।
আমরা আশা করি, বিশ্ব তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো ধ্বংসযজ্ঞের মুখে পড়বে না। তবে যদি বিশ্বনেতারা পারমাণবিক যুদ্ধের পথ বেছে নেন, তাহলে অন্তত কোথায় আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে, সেই ধারণা আমাদের থাকল।