ইরান হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর সামরিক হামলা চালায়, তাহলে তারা মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে পাল্টা আঘাত হানবে এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করে দেবে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন, যাতে তেহরানকে নতুন পরমাণু চুক্তিতে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “দুই উপায়ে ইরানকে সামলানো যেতে পারে: সামরিকভাবে বা একটি চুক্তির মাধ্যমে।”
এই চিঠির জবাবে ইরান কড়া বার্তা পাঠিয়েছে, যা ওমানের মাধ্যমে পাঠানো হয়। ইরানের সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ ক্বালিবাফ শুক্রবার বলেন, “যদি আমেরিকা ইরানের মর্যাদায় আঘাত হানে, তাহলে পুরো অঞ্চল বিস্ফোরিত হবে, যেন গোলাবারুদের গুদামে স্ফুলিঙ্গ ছোঁয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রদের ঘাঁটিগুলো আর নিরাপদ থাকবে না।”
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্তত তিনটি বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপে মোতায়েন করা হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, মার্কিন বিমান বাহিনীর বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান ক্যাম্প থান্ডার কোভে অবস্থান করছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে, আরও কয়েকটি যুদ্ধবিমান ও সামরিক সরঞ্জাম সেখানে পাঠানো হচ্ছে। বিভিন্ন উড়োজাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি সি-১৭ বিমানও দিয়েগো গার্সিয়ায় পাঠিয়েছে, যা সাধারণত দ্রুত সেনা ও সরঞ্জাম পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
স্টেলথ প্রযুক্তির বি-২ বোমারু বিমান শত্রুর রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম এবং এটি পরমাণু ও প্রচলিত অস্ত্র বহনে সক্ষম। দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপ থেকে মার্কিন বিমান বাহিনী সহজেই ইরান এবং ইয়েমেনের ওপর হামলা চালাতে পারবে।
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালানো হয়েছে। রাজধানী সানাসহ হোদেইদা, সা’দা এবং মারিব প্রদেশে অন্তত ১৯টি হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানও কূটনৈতিক দরজা পুরোপুরি বন্ধ করেনি। ইরানের সর্বোচ্চ নেতার উপদেষ্টা কামাল খাররাজি বলেছেন, “আমরা এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনার জন্য প্রস্তুত, যাতে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা যায় এবং উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।”
পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি জানিয়েছেন, ট্রাম্পের চিঠির আনুষ্ঠানিক জবাব দেওয়া হয়েছে এবং ওমানের মাধ্যমে তা পাঠানো হয়েছে। তবে চিঠির বিস্তারিত বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতির সমালোচনা করে ইরান বলেছে, আলোচনার জন্য আগে ওয়াশিংটনকে তাদের কঠোর নীতি পরিবর্তন করতে হবে।