ট্রাম্পের নতুন শুল্ক পরিকল্পনা: ১৮০টিরও বেশি দেশের ওপর ‘সুন্দর’ পাল্টা শুল্ক ঘোষণা
ওয়াশিংটন: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ঘোষণা করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ১৮০টিরও বেশি দেশের ওপর “সুন্দর” পাল্টা শুল্ক আরোপ করছে। সেইসঙ্গে, তালিকাভুক্ত নয় এমন সব দেশের জন্য ১০% ভিত্তিগত শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি গত কয়েক দশকের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ব্যাপক শুল্ক প্যাকেজ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর শুল্ক আরোপকারী দেশগুলোর মধ্যে মুদ্রা হেরফের ও বাণিজ্য বাধার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে উল্লিখিত শতাংশগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।
কোন দেশ কী শুল্ক দিচ্ছে?
প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র নিম্নলিখিত হার অনুযায়ী শুল্ক আরোপ করবে, যেখানে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর যুক্তরাষ্ট্রের ওপর শুল্কও উল্লেখ করা হয়েছে—
• চীন: ৩৪% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৬৭%)
• ইউরোপীয় ইউনিয়ন: ২০% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৩৯%)
• ভিয়েতনাম: ৪৬% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৯০%)
• তাইওয়ান: ৩২% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৬৪%)
• জাপান: ২৪% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৪৬%)
• ভারত: ২৬% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৫২%)
• দক্ষিণ কোরিয়া: ২৫% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৫০%)
• থাইল্যান্ড: ৩৬% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৭২%)
• সুইজারল্যান্ড: ৩১% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৬১%)
• ইন্দোনেশিয়া: ৩২% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৬৪%)
• মালয়েশিয়া: ২৪% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৪৭%)
• কাম্বোডিয়া: ৪৯% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৯৭%)
• যুক্তরাজ্য: ১০% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১০%)
• দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩০% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৬০%)
• ব্রাজিল: ১০% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১০%)
• বাংলাদেশ: ৩৭% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৭৪%)
• সিঙ্গাপুর: ১০% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১০%)
• ইসরাইল: ১৭% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৩৩%)
• ফিলিপাইন: ১৭% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৩৪%)
• শ্রীলঙ্কা: ৪৪% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৮৮%)
• পাকিস্তান: ২৯% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৫৮%)
• তুরস্ক: ১০% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১০%)
• সৌদি আরব: ১০% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১০%)
• ইরাক: ৩৯% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৭৮%)
• মিয়ানমার: ৪৪% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৮৮%)
• লাওস: ৪৮% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৯৫%)
• নেপাল: ১০% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১০%)
• আফগানিস্তান: ১০% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৪৯%)
• আর্জেন্টিনা: ১০% (যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১০%)
এছাড়াও, ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে, তালিকাভুক্ত নয় এমন সকল দেশের ওপর একটি ভিত্তিগত ১০% শুল্ক আরোপ করা হবে।
‘মুক্তির দিন’ উদযাপন ও বাণিজ্য যুদ্ধের নতুন ধাপ
ট্রাম্প ও তার প্রশাসন কয়েক সপ্তাহ ধরে “মুক্তির দিন” এবং নতুন শুল্ক পরিকল্পনার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। যদিও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে এই শুল্ক হার সম্পূর্ণ পাল্টা না-ও হতে পারে।
এই নতুন শুল্ক পরিকল্পনা ট্রাম্পের প্রশাসনের অন্যতম বৃহত্তম অর্থনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর আগে, তিনি তার প্রথম তিন মাসের মধ্যে—
• গাড়ি আমদানিতে ২৫% শুল্ক,
• চীনা পণ্যে ১০% শুল্ক,
• ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ২৫% শুল্ক,
• কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫% শুল্ক (যেসব পণ্য USMCA চুক্তির আওতায় নয়)
ঘোষণা করেছিলেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নতুন শুল্ক নীতি বৈশ্বিক বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বেশ কয়েকটি দেশের সম্পর্ককে নতুন করে উত্তপ্ত করতে পারে।