চীন যুক্তরাষ্ট্রের সব পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশে উন্নীত করেছে, যা কার্যকর হবে ১২ এপ্রিল থেকে। বাণিজ্যযুদ্ধের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কারণ চীনের কিছু পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
এই উত্তেজনার মধ্যে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (EU) আহ্বান জানিয়েছেন চীনের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের “একতরফা এবং দমনমূলক আচরণ” মোকাবিলা করতে। শুক্রবার বেইজিংয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে বৈঠকে শি বলেন, “শুল্কযুদ্ধে কোনো বিজয়ী নেই, আর বিশ্বকে অবজ্ঞা করলে ফল হবে আত্মবিচ্ছিন্নতা।”
শি আরও জানান, গত সাত দশকের বেশি সময় ধরে চীন আত্মনির্ভরতা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে উন্নয়ন অর্জন করেছে, কখনও বাইরের দয়ার ওপর নির্ভর করেনি এবং অন্যায় চাপে ভয় পায় না।
তিনি উল্লেখ করেন, চীন ও ইউরোপ বিশ্ব অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং উভয় পক্ষই বৈশ্বিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক গ্লোবালাইজেশনের প্রবল সমর্থক। তিনি বলেন, চীন ও ইইউ একসাথে কাজ করে আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি এবং ন্যায্যতা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে পারে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী সানচেজ বলেন, “চীন ইইউ-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, এবং স্পেন চায় ইউরোপ-চীন সম্পর্ক আরও মজবুত হোক।” তিনি জানান, ইউরোপ মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে এবং একতরফা শুল্ক বৃদ্ধির বিপক্ষে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো আশাবাদী যে চীনের সঙ্গে একটি কার্যকর চুক্তি হবে। তিনি বলেন, “শেষ পর্যন্ত আমরা এমন কিছু করব যা উভয় দেশের জন্যই ভালো হবে।”
এদিকে, বাণিজ্য অস্থিরতার জেরে মার্কিন ডলারের মান তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। ডয়েচে ব্যাংকের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, “ক্ষতিটা ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে।”
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, ইউরোপের প্রধান তিনটি শেয়ার বাজার এবং এশিয়ার অনেকগুলো বাজারেই পতনের ধাক্কা লেগেছে এই অনিশ্চয়তা ঘিরে। বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন করে এক অস্থিরতার আবহ তৈরি হয়েছে।