নিজস্ব প্রতিবেদক |
কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে টান টান উত্তেজনার মধ্যেই বাংলাদেশকে যুদ্ধের জন্য “সর্বোচ্চ প্রস্তুতি” নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ‘আকাশ বিজয়’ মহড়া শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“অনেকের মতো আমিও যুদ্ধবিরোধী। পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক— এটা কখনোই চাই না। যুদ্ধ প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধকে ডেকে আনে, তাই তার বিরুদ্ধেও আমার আপত্তি থাকে। তবে বাস্তবতা হলো, আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করছি যেখানে প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। এমন প্রেক্ষাপটে কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই বসে থাকা অকল্পনীয়।”
তিনি বলেন,
“এই মুহূর্তে ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। সকালের সংবাদে দেখেছি—হয়তো গুজব—যে আজই যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। এমন বাস্তবতায় আমরা বসবাস করছি। তাই এখন প্রস্তুতি না নেওয়া আত্মঘাতী হবে।”
ড. ইউনূস আরও বলেন,
“এই ধরনের পরিস্থিতিতে আধা-আধা প্রস্তুতি নিয়ে কাজ চলবে না। জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। প্রস্তুতিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে হবে—এটাই এখন প্রয়োজন।”
অর্থনীতি দুর্বল, তবু প্রস্তুতির বিকল্প নেই
অর্থনীতির বাস্তবতা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন,
“আমাদের অর্থনীতি এখন দুর্বল অবস্থায় আছে। স্বাধীনতার এত বছর পরও বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠতে পারেনি। তার ওপর বিগত সরকারের দুর্নীতি ও অপচয়ের কারণে যে সামর্থ্য ছিল তাও হ্রাস পেয়েছে। ফলে আমাদের সামনে এখন দু’টি পথ—একদিকে শান্তির জন্য হাত বাড়ানো, আর অন্যদিকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া।”
বিমানবাহিনীর মহড়া দেখে গর্বিত
বিমানবাহিনীর মহড়া দেখে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন,
“এ রকম দৃশ্য আমরা সাধারণত সিনেমায় দেখি। বাস্তবে দেখা হয় না। আজ সেটা দেখলাম, এবং অত্যন্ত গর্বিত ও আশাবাদী বোধ করছি। এতে আমাদের সাহস বাড়ে—শুধু যুদ্ধের জন্য নয়, যে কোনো কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যও।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেভাবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত হচ্ছে, তা দেখে বুক ভরে যায়। আমাদের ভবিষ্যতের জন্য এটি অত্যন্ত ইতিবাচক একটি ইঙ্গিত।”