মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত উচ্চ হারের শুল্ক ইস্যুতে আলোচনার একটি প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে চীন। বিষয়টি চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা কমার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা বৈশ্বিক বাজারকে দীর্ঘদিন ধরে অস্থির করে রেখেছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৪৫ শতাংশ শুল্ক নিয়ে আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার যোগাযোগ করেছে। চীন বলেছে, আলোচনা করতে তারা প্রস্তুত, তবে সেই আলোচনার ভিত্তি হতে হবে আন্তরিকতা ও ন্যায়ভিত্তিক আচরণের ওপর।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, “সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে একাধিকবার চীনের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। চীন বর্তমানে সেই প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে।”
তবে মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে যে, আলোচনাকে চাপে ফেলার বা চাপ সৃষ্টি করে কিছু আদায় করে নেওয়ার কৌশল হিসেবে ব্যবহার করলে তা সফল হবে না। যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফা শুল্ক প্রত্যাহার করে ভুল নীতির সংশোধন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
চীন এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনো আলোচনার অনুরোধ করে না জানালেও, ইঙ্গিত দিচ্ছে যে প্রথম পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্রকেই নিতে হবে। এমন এক সময়ে এই প্রস্তাব এল, যখন চীন মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস, দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং চলমান সম্পত্তি সংকটের মতো জটিল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
বেইজিং বলেছে, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ ‘অর্থনৈতিক দাদাগিরি’র শামিল এবং এতে চীনের অর্থনৈতিক অগ্রগতি থেমে থাকবে না। রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যমে এর সমালোচনার পাশাপাশি, চীন চুপিচুপিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পণ্যের ওপর তার নিজস্ব ১২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক থেকে অব্যাহতির তালিকা তৈরি করেছে—যার মধ্যে রয়েছে ওষুধ, মাইক্রোচিপ এবং জেট ইঞ্জিন, জানিয়েছে বাংলারধ্বনি।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা, যেমন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ও হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হাসেট আশাবাদ প্রকাশ করেছেন যে শিগগিরই উত্তেজনা প্রশমনের পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, “আমি বিশ্বাস করি চীন একটি সমঝোতায় যেতে আগ্রহী হবে। তবে এটি একাধিক ধাপে এগোবে—প্রথমে উত্তেজনা কমাতে হবে, তারপর বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তির দিকে এগোনো যাবে।”
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও বুধবার জানান, চীনের সঙ্গে একটি চুক্তির “খুব ভালো সম্ভাবনা” রয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আন্তর্জাতিক পরিবেশে পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন, যদিও তিনি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি।