রাশিয়ার সম্ভাব্য সরাসরি সামরিক হামলার আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা কৌশল পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন স্যার কিয়ার স্টার্মার। ক্যাবিনেট অফিস বর্তমানে একটি গোপন “হোমল্যান্ড ডিফেন্স প্ল্যান” হালনাগাদ করছে, যা শত্রু রাষ্ট্রের আক্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের করণীয় নির্ধারণ করবে।
এই পদক্ষেপ রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকি ও প্রোপাগান্ডার প্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে, যা ইউক্রেনকে যুক্তরাজ্যের সমর্থনের কারণে আরও উসকে উঠেছে। হালনাগাদ পরিকল্পনায় মিসাইল হামলা, সাইবার আক্রমণ এবং এমনকি পারমাণবিক হামলার মতো বিভিন্ন ধরনের সম্ভাব্য হুমকি অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে লক্ষ্য করতে পারে।
সরকারি মন্ত্রী ও রাজপরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি যুদ্ধকালীন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ জনসেবা সচল রাখার ব্যবস্থাও এই পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন হুমকির প্রভাব মূল্যায়ন করেছে। জানুয়ারিতে প্রকাশিত এক ঝুঁকি বিশ্লেষণে জানানো হয়, একটি সফল হামলায় বেসামরিক নাগরিক ও জরুরি সেবার কর্মীদের প্রাণহানি হতে পারে এবং এর ফলে অর্থনীতি ও জরুরি পরিষেবায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
গত মাসে যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা রাশিয়ার ইউক্রেনে প্রথম রাতের হামলার পরিস্থিতি ভিত্তিক একটি মহড়া পরিচালনা করেন, যার মাধ্যমে দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যাচাই করা হয়। আরএএফ-এর এয়ার কমোডোর ব্লাইথ ক্রফোর্ড জানান, মহড়ার ফলাফল উদ্বেগজনক ছিল—যেখানে বিমানঘাঁটির স্বল্পতা ও যুদ্ধবিমান সুরক্ষার ঘাটতি ধরা পড়ে।
এই পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা ইসরায়েলের “আয়রন ডোম”-এর মতো একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন। এমআই৫ প্রধান কেন ম্যাককালাম জানান, গত বছরে শত্রু রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট ষড়যন্ত্র তদন্তের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেনকে সমর্থনের কারণে যুক্তরাজ্য এখন পুতিন প্রশাসনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
সরকারের একজন মুখপাত্র জানান, যুক্তরাজ্যের কাছে বহু বছর ধরে গড়ে তোলা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা একটি শক্তিশালী জরুরি পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে, রাশিয়া টানা দ্বিতীয় রাত ইউক্রেনের ড্রোন হামলার অভিযোগ করেছে, যার ফলে মস্কোর প্রধান বিমানবন্দরগুলো কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখতে হয়েছে।