লন্ডনের রাস্তায় ২০২৬ সাল থেকেই দেখা যাবে চালকবিহীন স্বচালিত ট্যাক্সি। উবার ঘোষণা দিয়েছে, আগামী বসন্তেই তারা লন্ডনে রোবোট্যাক্সি পরিষেবা শুরু করতে যাচ্ছে। ব্রিটেনের পরিবহন বিভাগ (DfT) এই সিদ্ধান্তকে আগের পরিকল্পনার চেয়ে এক বছর আগেই বাস্তবায়ন করছে।
এই প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যে কোনও কোম্পানিকে চালক ছাড়া স্বচালিত গাড়ি দিয়ে বাণিজ্যিক যাত্রী পরিবহনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। নতুন আইন অনুযায়ী, কোম্পানিগুলো ছোট পরিসরে চালকবিহীন ট্যাক্সি ও বাস পরিষেবা চালু করতে পারবে, যেগুলো অ্যাপের মাধ্যমে বুক করা যাবে।
পরিবহন সচিব হেইডি আলেকজান্ডার বলেছেন, “পরিবহন ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। স্বচালিত গাড়ি কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ এবং যুক্তরাজ্যকে প্রযুক্তির শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করছে।”
তিনি আরও জানান, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে রাস্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সরকারের মূল লক্ষ্য, এবং এর ফলে ব্রিটিশ শিল্প ও উদ্ভাবনের বিকাশে বড় ধাপ ফেলা হবে।
পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, স্বচালিত যানবাহন প্রযুক্তির মাধ্যমে ২০৩৫ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যে ৩৮ হাজার নতুন চাকরি সৃষ্টি হতে পারে এবং এটি দেশের অর্থনীতিতে ৪২ বিলিয়ন পাউন্ড যুক্ত করতে পারবে।
প্রথমদিকে গাড়িগুলোতে একজন মানবচালক উপস্থিত থাকবেন, যিনি প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবেন। তবে ধীরে ধীরে এসব যানবাহন পুরোপুরি চালকবিহীন হয়ে উঠবে।
উবারের চিফ অপারেটিং অফিসার অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড জানান, “লন্ডনের রাস্তাগুলো বিশ্বের সবচেয়ে জটিল ও ব্যস্ত শহুরে পরিবেশগুলোর একটি। এই পরীক্ষা আমাদের স্বপ্নকে বাস্তবের আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে।”
উবার এই পরিষেবা চালাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ভিত্তিক স্টার্টআপ সংস্থা Wayve-এর সঙ্গে যৌথভাবে। Wayve-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক্স কেন্ডাল একে যুক্তরাজ্যে স্বচালিত যান প্রযুক্তির জন্য “একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত” হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
গবেষণা বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার ৮৮ শতাংশই মানুষের ভুলের কারণে ঘটে। চালকবিহীন গাড়ি যেমন ক্লান্ত হয় না, তেমনি তারা মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালায় না বা গতিসীমা অতিক্রম করে না। এই প্রযুক্তি মানুষের তুলনায় দ্রুত প্রতিক্রিয়া দিতে সক্ষম এবং অগণিত চালানোর পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে প্রশিক্ষিত হয়।
DfT-এর মতে, এই প্রযুক্তি দুর্ঘটনার সংখ্যা এবং প্রাণহানি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।