পর্তুগালের কেন্দ্র-ডানপন্থী সংখ্যালঘু সরকার অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সোমবার এক ঘোষণায় জানানো হয়েছে, পর্তুগালে নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের আগে বৈধভাবে বসবাসের সময়সীমা দ্বিগুণ করে ১০ বছর করা হয়েছে।
সরকারি মন্ত্রী আন্তোনিও লেইতাও আমারো বলেন, “নাগরিকত্ব এবং স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়ায় প্রবেশের শর্তগুলো আমরা উল্লেখযোগ্যভাবে কঠোর করছি। এটি সরকারের ঘোষিত নীতিমালার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।”
এছাড়াও, আইনি অভিবাসীদের পরিবারের সদস্যদের রেসিডেন্স পারমিট ইস্যু করার নিয়মসহ অন্যান্য অভিবাসন নীতিও কঠোর করা হবে বলে জানান তিনি।
সবচেয়ে আলোচিত পরিবর্তনগুলোর একটি হলো— গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব বাতিলের বিধান যুক্ত করা।
বিশেষ সুবিধা পাবে পর্তুগিজভাষী দেশগুলো
সাধারণ অভিবাসীদের ক্ষেত্রে নাগরিকত্বের জন্য ১০ বছরের বৈধ বসবাস আবশ্যক হলেও, পর্তুগিজ ভাষাভাষী দেশ— যেমন ব্রাজিল, অ্যাঙ্গোলা ও মোজাম্বিকের নাগরিকদের জন্য এই মেয়াদ ৭ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন শর্তসমূহে কী থাকছে
বর্তমানে বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী, নাগরিকত্ব পেতে প্রার্থীকে পর্তুগিজ ভাষায় দক্ষতা, তিন বছরের বেশি কারাদণ্ডের কোনো রেকর্ড না থাকা এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি না হওয়ার প্রমাণ দিতে হয়।
নতুন প্রস্তাবিত শর্তগুলোর মধ্যে যুক্ত হয়েছে:
বর্ধিত অভিবাসন এবং রাজনৈতিক চাপ
প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যার দেশ পর্তুগালে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভিবাসনের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত ১৫ লাখের বেশি বৈধ অভিবাসী দেশটিতে বসবাস করছেন বলে জানিয়েছে অভিবাসন ও আশ্রয় সংস্থা AIMA। এর মধ্যে ব্রাজিলিয়ানরা সবচেয়ে বড় গ্রুপ, সংখ্যা ৪.৫ লাখেরও বেশি।
২০২৩ সালে প্রায় ১ লাখ ৪১ হাজার বিদেশি নাগরিককে পর্তুগিজ নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কম। বর্তমানে ৪ লাখেরও বেশি আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
চরম ডানপন্থার চাপ ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
গত মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চরম ডানপন্থী দল ‘চেগা’ প্রধান বিরোধী দলে পরিণত হয়। দলটি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের জোরালো দাবি জানিয়ে আসছিল। নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের খসড়াটি এখনো সংসদে উপস্থাপন করা হয়নি, তবে চেগা’র সমর্থনে এটি অনুমোদনের ব্যাপারে আশাবাদী সরকার।