বেইজিং, ২৮ মার্চ ২০২৫: চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, বেইজিং ঢাকা কর্তৃক চীনা ঋণের সুদহার কমানোর অনুরোধ বিবেচনা করবে। শুক্রবার ইউনূসের প্রেস সচিব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি ছিল তার প্রথম দ্বিপাক্ষিক রাষ্ট্রীয় সফর। তবে এখনো তিনি প্রতিবেশী দেশ ভারত সফর করেননি, দুই দেশের মধ্যে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার কারণে সফরটি বিলম্বিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সফরকালে বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে মোট ২.১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি আদায় করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের নতুন প্রতিশ্রুতি
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ৩০টি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে এক্সক্লুসিভ চীনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোনে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস চীনের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানানোর পর এই প্রতিশ্রুতি আসে।
চীনা সরকার মোংলা বন্দর আধুনিকায়নের জন্য ৪০০ মিলিয়ন ডলার, চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা হিসেবে ১৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদানের পরিকল্পনা করেছে। বাকি অর্থ অনুদান ও অন্যান্য অর্থায়ন কাঠামোর মাধ্যমে আসবে বলে জানা গেছে।
“একটি গুরুত্বপূর্ণ সফর”
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এই সফরকে “একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক” হিসেবে অভিহিত করেছেন। চারদিনের এই দ্বিপাক্ষিক সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীন অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (BIDA) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (BEZA) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “এই সফর চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মুক্ত করবে এবং এতে বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রবাহ তৈরি হতে পারে।”
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে অনুরোধ জানান, যাতে তিনি চীনা বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য সবুজ সংকেত দেন।
এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আশা করা হচ্ছে, বিশেষ করে বাংলাদেশের শিল্প ও অবকাঠামো খাতে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।