ট্রাম্পের শুল্ককে সুযোগ হিসেবে দেখছেন কিয়ার স্টারমার: যুক্তরাজ্যের সংস্কার ও বৈশ্বিক পুনর্গঠনের সম্ভাবনা
কার্ডিফ – ৫ এপ্রিল ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন যুক্তরাজ্যের পণ্যে নতুন করে শুল্ক আরোপ করেন, তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার এই ঘটনাকে শুধু একটি চ্যালেঞ্জ নয়, বরং একটি সম্ভাবনার জানালা হিসেবে দেখছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষিত ১০% শুল্ক যুক্তরাজ্যের আমদানির উপর প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে স্টারমারের বিশ্বাস, এই বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যেও যুক্তরাজ্য নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তোলার সুযোগ পাচ্ছে।
“আমরা একটি বৈশ্বিক অস্থিরতার যুগে প্রবেশ করছি,” বলেন প্রধানমন্ত্রী। “কিন্তু এই অস্থিরতাই আমাদের সামনে নতুন পথ তৈরির, সংস্কারের এবং ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করার সুযোগ এনে দিয়েছে।”
সংকট থেকেই সম্ভাবনার জন্ম
শুল্কের জবাবে পাল্টা শুল্ক আরোপের পথ না বেছে, স্টারমার প্রশাসন কূটনৈতিক সমাধানের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক চুক্তির জন্য আলোচনা চলছে, যার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার পাশাপাশি নতুন সুযোগও সৃষ্টি হতে পারে।
এই চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:
• যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য কর ছাড়
• কৃষিপণ্যের উপর শুল্ক কমানো
• কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) খাতে যৌথ নীতিমালা
যদিও আলোচনা এখনো চলছে, স্টারমার আশা করছেন এই চুক্তির মাধ্যমে ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাব কিছুটা হলেও ভারসাম্য পাবে।
সংস্কার ও স্থিতিশীলতার পথে
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী দেশের অভ্যন্তরে শিল্প উৎপাদন এবং অবকাঠামো উন্নয়নের উপর জোর দিচ্ছেন। এই কৌশল যুক্তরাজ্যকে বৈশ্বিক বাজারের অস্থিরতা থেকে কিছুটা সুরক্ষা দেবে বলেই সরকারের আশা।
সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা The Times-কে বলেন, “আমরা শুধু প্রতিক্রিয়া দিচ্ছি না, বরং এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ নতুনভাবে নির্মাণ করছি।”
উত্তর আয়ারল্যান্ডে প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ
উইন্ডসর ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় উত্তর আয়ারল্যান্ডে এই শুল্কের প্রভাব বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কারণ এখানে শুল্কের অমিল অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে
ব্যবসায়ী মহলের অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করলেও, স্টারমারের দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের কৌশল প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, সবকিছু নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার ফলাফল এবং দেশের শিল্প খাত কত দ্রুত অভিযোজিত হতে পারে তার উপর।
তবুও, এক অনিশ্চিত বিশ্বের মধ্যে স্টারমার সরকারের বার্তা স্পষ্ট: সংকটই পরিবর্তনের পথ দেখাতে পারে।