লন্ডন | গ্যাটউইক বিমানবন্দর ঘোষণা দিয়েছে যে তারা ব্যক্তিগত গাড়ি ও ট্যাক্সির জন্য ড্রপ-অফ চার্জ বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে। আগামী ২ মে থেকে নতুন এই ফি কার্যকর হবে এবং এতে করে এটি লন্ডনের মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।
যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দরটি তার উত্তরের রানওয়ের স্থায়ী ব্যবহারের অনুমোদন পেতে হলে গণপরিবহনে যাত্রী আগমনের হার ৫৪ শতাংশে উন্নীত করার শর্তে সম্মত হয়েছে। এই উদ্দেশ্যে যাত্রীদের গণপরিবহনে আগ্রহী করতে ড্রপ-অফ ফি বাড়ানোর পথ বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্যাটউইকের প্রধান নির্বাহী স্টুয়ার্ট উইঙ্গেট।
বর্তমানে, গ্যাটউইকে ১০ মিনিটের জন্য ড্রপ-অফ চার্জ £৬, এরপর প্রতি মিনিটে £১ করে বৃদ্ধি পায়—সর্বোচ্চ ২০ মিনিট পর্যন্ত। দৈনিক সর্বোচ্চ চার্জ £২৬ এবং ৩০ মিনিট পর্যন্ত অবস্থান করার অনুমতি রয়েছে। ২ মে থেকে এই বেস চার্জ বাড়িয়ে £৭ করা হবে।
ট্যাক্সি চালকরা এই বাড়তি চার্জকে ‘নগদ আয়ের হাতিয়ার’ (cash cow) বলে অভিহিত করেছেন। অ্যাপ ড্রাইভারস অ্যান্ড কুরিয়ার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জামির ড্রেনি ‘BANGLARDHONI’কে বলেন, “মধ্যরাতের পর যখন আমি অবতরণ করি, তখন গণপরিবহন কোথায়?” তিনি বলেন, এই ফি বৃদ্ধিকে গণপরিবহন না ব্যবহার করায় যাত্রীদের ‘শাস্তি’ হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এক যাত্রী বলেন, “পুরো বিষয়টাই daylight robbery—একটা প্রকাশ্য লুটপাট। যদি জনগণকে ট্রেন ব্যবহার করতে চান, তাহলে ২৪ ঘণ্টা ট্রেন চালান আগে।”
লন্ডনের বিমানবন্দরগুলোতে ড্রপ-অফ চার্জের চিত্র:
• গ্যাটউইক: £৭ (২ মে থেকে); পরদিন মধ্যরাতের মধ্যে অনলাইন পেমেন্ট না করলে জরিমানা (PCN)।
• হিথ্রো: জানুয়ারিতে বাড়িয়ে £৬ করা হয়েছে; প্রি-পেইড বা পরবর্তী পেমেন্টে সুবিধা।
• স্ট্যানস্টেড: ১৫ মিনিট পর্যন্ত £৭; এরপর £২৫।
• লুটন: ৫ মিনিটে £৫, অতিরিক্ত প্রতি মিনিটে £১; ২০ মিনিটের বেশি থাকলে জরিমানা। ১৫ মিনিটের জন্য একটি মাঝারি দূরত্বের পার্কিং বিনামূল্যে।
• লন্ডন সিটি বিমানবন্দর: ড্রপ-অফ ফ্রি, তবে অপেক্ষা নিষিদ্ধ; ব্লু ব্যাজ হোল্ডারদের জন্য ৩০ মিনিট ফ্রি পার্কিং।
রানওয়ে সম্প্রসারণ ও বিতর্ক
গ্যাটউইক তাদের জরুরি উত্তরের রানওয়েটিকে স্থায়ীভাবে ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে, যা প্রতি বছর অতিরিক্ত ১ লাখ ফ্লাইট পরিচালনার সক্ষমতা দেবে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে £২.২ বিলিয়ন, যা গ্যাটউইকের শেয়ারহোল্ডাররা বহন করবে।
তবে পরিবেশগত প্রভাব এবং স্থানীয় রাস্তাঘাটে বাড়তি চাপের অভিযোগে বিরোধীরা বলছেন, “এখন থেকেই গ্যাটউইকের ট্রাফিকে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এর দায় তাদের নিতে হবে।”
পরিবহন সচিব হেইডি আলেক্সান্ডার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে পরিবেশ, শব্দ দূষণ এবং যাত্রী পরিবহনে টেকসই পরিকল্পনার ভিত্তিতে সংশোধিত প্রস্তাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।