যুক্তরাজ্যে অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ব্রিটেনে কাজের উদ্দেশ্যে অভিবাসন করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ইংরেজি ভাষায় ‘এ-লেভেল’ মানের দক্ষতা থাকতে হবে। এছাড়া স্থায়ী বসবাসের আবেদন করতে হলে অপেক্ষা করতে হতে পারে ১০ বছর পর্যন্ত।
আগামী সপ্তাহে প্রকাশিত হতে যাওয়া নতুন অভিবাসন হোয়াইট পেপারে লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমারের কঠোর অভিবাসন পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে। স্থানীয় নির্বাচনে রিফর্ম ইউকে দলের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইংরেজি দক্ষতার মান বাড়ানো হচ্ছে
বর্তমানে ব্রিটেনে কাজের ভিসা পেতে সাধারণত মাধ্যমিক পর্যায় (GCSE) মানের ইংরেজি দক্ষতা প্রয়োজন। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আগত অভিবাসীদের অন্তত ‘বি২’ স্তরের ইংরেজি জানতে হবে, যা বিদেশি ভাষায় ‘এ-লেভেল’ সমমানের। এই স্তরে একজন ব্যক্তি ইংরেজিতে সাবলীলভাবে, নির্দ্বিধায় এবং কার্যকরভাবে মত প্রকাশ করতে সক্ষম হন।
একটি সরকারি সূত্র বলেছে, “এই নতুন নিয়মের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য একটি নিয়ন্ত্রিত, বাছাইকৃত এবং ন্যায্য অভিবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়।”
স্থায়ী বসবাসের জন্য অপেক্ষার সময় দ্বিগুণ
বর্তমানে যারা সীমিত সময়ের কর্মসংস্থানের ভিসায় ব্রিটেনে আসেন, তারা সাধারণত পাঁচ বছর পর ‘ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন’ (স্থায়ী বসবাসের অনুমতি) আবেদন করতে পারেন। তবে নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই সময়সীমা ১০ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে, বিশেষ করে যদি কোনো ব্যক্তি দীর্ঘ সময় যুক্তরাজ্যের বাইরে থাকেন বা আর্থিকভাবে অনিশ্চিত অবস্থায় থাকেন।
উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশের নাগরিকদের ভিসা সীমিত হতে পারে
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও শ্রীলঙ্কার মতো কিছু দেশের নাগরিকদের ওয়ার্ক ও স্টাডি ভিসার ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হতে পারে, যেসব দেশের নাগরিকরা ভিসার মেয়াদ শেষে দেশ ছাড়তে অনীহা দেখান অথবা আশ্রয়প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা ছিল ১,০৮,১৩৮, যা ২০০১ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ। এ সংখ্যা কমাতে হোম অফিস এখন আগেই ‘প্রোফাইলিং’ করে ঝুঁকিপূর্ণ আবেদনকারীদের শনাক্ত করতে চাইছে।
রাজনৈতিক চাপের মুখে কড়া অবস্থান
লেবার এবং কনজারভেটিভ উভয় দলই এখন রিফর্ম ইউকের জনপ্রিয়তা ঠেকাতে অভিবাসন ইস্যুতে কড়া অবস্থানে যাচ্ছে। কনজারভেটিভদের ‘ডিপোর্টেশন বিল’ এবং লেবার দলের নতুন অভিবাসন সংস্কার পরিকল্পনা দুইটিই ব্রিটিশ ভোটারদের কাছে অভিবাসন বিষয়ে শক্ত বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।