হ্যামবুর্গ, জার্মানি — জার্মানির হ্যামবুর্গ শহরের কেন্দ্রীয় ট্রেন স্টেশনে শুক্রবার সন্ধ্যায় ছুরি হামলায় অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের এক মুখপাত্র জানান, আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং সকলকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হ্যামবুর্গ পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিশ্বাস করে যে ৩৯ বছর বয়সী এক নারী একাই এই হামলা চালিয়েছেন। তবে ঘটনাটি এখনও তদন্তাধীন এবং হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যায়নি।
পুলিশের মুখপাত্র ফ্লোরিয়ান অ্যাবেনসেথ বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ওই নারী মানসিকভাবে অস্থির ছিলেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর তিনি কোনো প্রতিরোধ না করে আত্মসমর্পণ করেন।
হ্যামবুর্গের মেয়র পিটার শেন্টশার শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেন, “অপরাধীর আটক নিশ্চিত হয়েছে। আহতদের প্রতি আমি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করছি এবং যারা গুরুতর আহত হয়েছেন তাদের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি।”
জার্মানির নবনিযুক্ত চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ হামলার বিষয়ে হ্যামবুর্গের মেয়রের সঙ্গে কথা বলেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হামলাটি ঘটে স্টেশনের এক ব্যস্ত প্ল্যাটফর্মে, একটি দূরপাল্লার ট্রেনের সামনে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যখন হামলাকারী এলোপাতাড়ি যাত্রীদের উপর ছুরি চালাতে শুরু করেন।
জার্মানির ব্যস্ততম এবং পুলিশের মতে সবচেয়ে বিপজ্জনক রেল স্টেশন হচ্ছে হ্যামবুর্গের এই কেন্দ্রীয় স্টেশন। সহিংস ঘটনার উচ্চ প্রবণতার কারণে স্টেশনটি এবং তার আশপাশের এলাকা ‘অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে পুলিশ সহজেই তল্লাশি ও গ্রেপ্তার করতে পারে।
এই সপ্তাহে এটি জার্মানিতে দ্বিতীয় বড় ছুরি হামলার ঘটনা।
এর আগে সোমবার, পশ্চিম জার্মানির বিয়েলেফেল্ড শহরের একটি বারের বাইরে ছুরি হামলার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবারের ওই হামলায় পাঁচজন আহত হন।
পুলিশ জানিয়েছে, ৩৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ২০২৩ সালে সিরিয়া থেকে জার্মানিতে আসেন এবং তাকে সাময়িকভাবে থাকার অনুমতি দেয়া হয়।
ডার স্পিগেল পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তি একটি অনুবাদ অ্যাপ ব্যবহার করে পুলিশকে জানায় যে, তিনি ইসলামিক স্টেট (আইএস) সন্ত্রাসী সংগঠনকে সমর্থন করেন।
পুলিশ আরও জানায়, ঘটনাস্থলে অভিযুক্তের ব্যাকপ্যাক থেকে দুটি বড় রান্নার ছুরি, একটি লাঠির সঙ্গে বাঁধা ছুরি এবং একটি প্লাস্টিকের বোতলে পেট্রোল উদ্ধার করা হয়েছে।