হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক যাত্রীর অস্বাভাবিক আচরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় তা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি ঘিরে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
বেবিচকের দেওয়া তথ্যানুসারে, ৩ জুন রাত ১টা ৩৬ মিনিটে বোর্ডিং ব্রিজ-৬ নম্বরে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের (ফ্লাইট MH-196) যাত্রী মো. তুহিন আলী হঠাৎ উচ্চস্বরে চিৎকার শুরু করেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এ সময় মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের দুই কর্মকর্তা তার পাসপোর্ট ও ব্যাগ হস্তান্তরের চেষ্টা করলে, তিনি তা নিতে অস্বীকৃতি জানান। বরং, তিনি উলটো জিনিসপত্র ও টাকা-পয়সা ছুড়ে ফেলেন এবং মা-বাবা সম্পর্কেও অশালীন মন্তব্য করেন।
তখন আশেপাশে থাকা যাত্রী ও কর্মচারীরা জড়ো হয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যা অন্য একটি ফ্লাইটের স্ক্যানিং কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়।
পরবর্তীতে বিমানবন্দর নিরাপত্তা বাহিনী ও এয়ারলাইন্সের কর্মীরা তাকে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করে ব্যাগেজ বেল্টে নেওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু তিনি তা মানেননি এবং রাগান্বিতভাবে ১ নম্বর বেল্টের দিকে চলে যান। পুরো সময়জুড়ে তার আচরণ ছিল অতিমাত্রায় উত্তেজনাপূর্ণ ও অস্বাভাবিক।
পরে তার ভাই ও চাচার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, মো. তুহিন আলী অতীতেও মাদকাসক্ত অবস্থায় এমন আচরণ করেছেন এবং সেদিন গভীর রাতে তাকে নিতে আসা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানান।
পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে, সকাল ৫টা ৩০ মিনিটে তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
বেবিচক তাদের বিবৃতিতে বলেছে, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, সিভিল এভিয়েশন এবং সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ পেশাদারিত্ব ও ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার আংশিক ও বিকৃতভাবে প্রচারের ফলে মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছে।
সংস্থাটি ভবিষ্যতের জন্য আহ্বান জানিয়েছে, এমন সংবেদনশীল বিষয়ে যাচাই-বাছাই ছাড়া সামাজিক মাধ্যমে কিছু না ছড়ানোর জন্য। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ভাবমূর্তি রক্ষায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও তারা উল্লেখ করেছে।